নিউজ সোনারগাঁ২৪ডটকম: ঈদের পর ২দিন টানা বৃষ্টির পর প্রিয়জনদের সাথে আনন্দ ভাগাভাগি করতে সোনারগাঁ উপজেলা অলিপুরা বাজার সংলগ্ম ব্রক্ষ্মপুত্র নদীর উপর নির্মিত অলিপুরা ব্রিজে দর্শনার্থীদের ছিল উপচে পড়া ভীড়। ব্রক্ষ্মপুত্র নদীর উপর নির্মান করা এ ব্রিজটিতে বর্ষার আনন্দ উপভোগ করতে দুপুরের পর থেকে বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ ও পরিবার পরিজন নিয়ে ভীড় করতে থাকে অলিপুরা ব্রিজে। দর্শনার্থীদের ভীড়ে সারা বিকাল জুড়ে ব্রিজটিতে ছিল টুকটাক যানজট। এরপরও আনন্দেও কোন কমতি ছিলনা ব্রিজে ঘুরতে আসা দর্শনার্থীদের।
সরেজমিনে সনমান্দি ইউনিয়নের অলিপুরা বাজার এলাকায় ব্রক্ষ্মপুত্র নদের উপর নির্মিত ব্রিজে দেখা যায় দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভীড়। দুপুরের পর থেকে আকাশে মেঘ থাকায় রোদের উত্তাপ না থাকায় বিভিন্ন বয়সের ছেলে-মেয়ে মহিলা শিশু, নারী-পুরুষ ও পরিবার পরিজন নিয়ে জড়ো হতে থাকে ব্রিজের উপর ও নিচে। বিকাল গড়াতে ব্রিজের দুপাশে দর্শনার্থীদের আগমনে কানায় পরিপূর্ন হয়ে যায়। ব্রিজের উপর দাড়িতে উঠতি বয়সের ছেলে মেয়েরা বিভিন্ন অঙ্গে-ডঙ্গে ছবি তুলতে ব্যস্ত সময় পার করেছে। তাছাড়া আকাশে মেঘের কারণে বর্ষা মৌসুমে নদীতে পূর্ন যৌবন থাকায় টলটলে পানিতে কলবর শব্দে আর দক্ষিনা বাতাসে ঘা জুড়িয়ে ব্রিজের রেলিংয়ে হেলান দিয়ে সবাই ব্যস্ত ক্রান্ত শরীরটাকে শীতল করতে। মেঘলা আকাশ আর বাতাসের গতি বেশী থাকায় এলামেলো চুল ছড়িয়ে মেয়ে ও নারীরা প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করতে কোন কমতি ছিলনা। অপরদিকে, বর্ষাকালে নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় ব্রক্ষপুত্র নদ যেন বিশাল আকাশ ধারন করেছে। এছাড়া নদীর দুপাশে গাছ-গাছালির সবুজ পরিবেশ নদীর রূপটাকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। এদিকে, ব্রিজে আসা দর্শনার্থীদের আরো আনন্দ দিতে স্থানীয় যুবকরা নদীতে স্পিডবোর্ডের ব্যবস্থা করেছেন। এজন্য ব্রিজের নিচ থেকে জনপ্রতি ৫০ টাকা করে দিয়ে টিকেট সংগ্রহ করতে হয়। এছাড়া ব্রিজে ঘুরতে আসা দর্শনার্থীদের আরো বিনোদন দিতে ব্রিজের নিচে সাউন্ড সিস্মেমেরও ব্যবস্থা করেছেন তারা। এতে নেচে গেয়ে নিজেদের মাতিয়ে রাখেন দর্শনার্থরা। অনেকে আবার নিচ উদ্যোগে নৌকা এনে পরিবার পরিজন নিয়ে ব্রিজের নিচে নদীর পাশে বিলে নৌকা খুটির সঙ্গে বেধে হাত দিয়ে নদীর পানি একে অপরের গায়ে ভিজিয়ে দিয়ে আনন্দ ভাগাভাগি করার চেষ্টা করছেন। এছাড়া অলিপুরা ব্রক্ষ্মপুত্র নদীতে বাংলাদেশের সর্বপ্রথম নির্মান করা রাবারড্যাম্পটির টিলাটিতে পা ভিজিয়ে বসতে বিলের হাটুপানি পার হয়ে অনেক দর্শনার্থী ব্রিজের নিচে টিলাটির উপর ভীড় করছে। আর ব্রিজের উপর ঘুরতে আসা দর্শনার্থীদের উপস্থিতির কারনে স্থানীয়রা বিভিন্ন ধরনের খাবার দোকানও বসেছে অলিপুরা বাজার ও ব্রিজের দুপাশে।
ব্রিজের ঘুরতে আসা পঞ্চমীঘাট এলাকার বাসিন্দা দিপা আক্তার জানান, আমাদের সাদিপুরে সামিরা ভিলেজ নামে একটি বিনোদন কেন্দ্র আছে। এছাড়া আমাদের পাশে তাজমহল ও পিরামিডও রয়েছে। এসব দেখতে দেখতে আর ভাল লাগে না কারণ এগুলো মানুষের তৈরী কৃত্রিম। কিন্তু অলিপুরা ব্রিজের আশপাশের প্রকৃতিক পরিবেশ, নির্মল শীতল বাতাস ও ঢেউয়ের কলবর শব্দ মন জুড়িয়ে যায়। যা টাকা দিয়ে কেনা সম্ভব না। এছাড়া এখন পুরো বর্ষাকাল হওয়ায় নদীতে পানি পুরিপূর্ন হয়ে বিশাল আকাল ধারণ করেছে। তাছাড়া দিনটি মেঘনা থাকায় নদীর আশে পাশের সবুজ প্রকৃতিক পরিবেশ মনটাকে আনন্দে বড়িয়ে দিয়েছে। সে জন্য ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পরিবার নিয়ে এখানে ঘুরতে এসেছি।
সনমান্দি ইউনিয়নের বাসিন্দা আরিফ খাঁন জানান, ঈদের বিনোদনের জন্য আমরা দেশের বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে থাকি। কিন্তু আমাদের বাড়ির পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ব্রক্ষ্মপুত্র নদটি বর্ষার মৌসুমে এত ভাল লাগে তা বুঝানোর ভাষা আমাদের নেই। সে জন্য সকল শ্রেনীর লোকজন এখানে এসে ঈদের আনন্দ উপভোগ করছে। বর্ষার কালে নদী পানিতে পরিপূর্ন থাকায় হাটুপানি দিয়ে পার হয়ে রাবারড্যাম্পের উপর বসে নদীর মাঝখানে আনন্দ উপভোগ করা যায়। দূষনমুক্ত বাতাসে নিঃশ্বাস নিয়ে মনটা জুড়িয়ে যায়। এছাড়া দর্শনার্থীদের নদীতে ঘুরার জন্য এখানকার স্থানীয়রা স্পিডবোর্ডের ব্যবস্থা করেছেন। পাশাপাশি বিভিন্ন বয়সের ছেলে মেয়েদের অতিরিক্ত আনন্দ দিতে ব্রিজের নিচে সাউন্ড সিম্পেমের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তিনি আরো জানান, আমাদের এলাকাবাসীর আনন্দ বিনোদন স্থায়ী করতে প্রশাসনে পক্ষ থেকে এখানে আসা দর্শনার্থীদের জন্য যদি ব্রিজের নিচে রাবার ড্যাম্পের উপর টিলাটিতে বসার ব্যবস্থা করতো তাহলে বিনোদনটা আরো বেশী উপভোগ করতে পারতো।